তিতাসে ভারী বর্ষণে ধসে গেল ২০০ বছরের পুরোনো জমিদার বাড়ি
ইমাম হোছাইন:
ধীরে ধীরে ধ্বংসের পথে দুইশত বছর পুরোনো পুরাকীর্তির অন্যতম নিদর্শন ও অমূল্য প্রত্নসম্পদ সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মজিদপুর জমিদার বাড়ি। সংস্কারের অভাবে, অযত্ন আর অবহেলায় জীর্ণ-শীর্ণ জংলাবৃত হয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এসব ভবন দেখতে ভিড় করতো দর্শনার্থীরা। ভবনগুলো সংরক্ষণ বা অপসারণ করা নাহলে যে কোনো সময় প্রানহানীর ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানান স্থানীয়রা। একসময় জৌলুস আর ঠাটবাট থাকলেও জমিদার বাড়িটি এখন বিরান পড়ে আছে। চারদিকে থমথমে ভূতুড়ে পরিবেশ। ভবনগুলোর দেওয়ালে জন্মেছে পরগাছা। নোনা ধরা ইটের দেয়াল খসে খসে পড়ছে। দেয়ালে দেয়ালে তৈরি হয়েছে বড় ফাটল। যেকোন সময় ধসে পড়ে অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারে এটি। ভাঙাচোরা অবস্থায় বাড়িটি এখন কোনো রকমে টিকে আছে আর ধ্বংসের প্রহর গুনছে। বাড়ির বিভিন্ন কামড়ায় লাকড়ির স্তুপ করে রেখেছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জমিদার বাড়ির মূল ভবনের পূর্ব পাশের একটি অংশ ধসে পড়েছে। ধসে পড়া ইট-সুরকি স্থানীয় লোকজন নিয়ে যেতে দেখা গেছে। ভবনের পূর্ব অংশ বিদ্যুৎ খুঁটিসহ ধসে পড়লে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিদ্যুতের লোকজন এসে খুঁটি বসিয়ে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক করেছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ধসে পড়া অংশ পরিদর্শন করেছে।
জানা যায়, ১৮০০ শতকের দিকে শ্রী রামলোচন রায় বাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিতাস, হোমনা, মেঘনা ও মুরাদনগর এলাকা ছিল তার জমিদারির আওতাধীন। এই বাড়িতে মোট ১৭ টি ভবন ছিল। এখন মাত্র হাতেগোনা কয়েকটি অবশিষ্ট আছে। বাকিগুলো ধস ও দখলে নিমজ্জিত হয়ে গেছে । এছাড়া ১ টি দিঘি ও ২০ টি পুকুর খনন করা হয়েছিল। সেগুলো এখন নামেমাত্র আছে। ইতিহাসে এই বংশের কয়েকজন জমিদারের নাম পাওয়া যায়। তারা হলেন- শ্রী কালীচরণ রায়, ব্রজেন্দ্র কুমার রায়, শিবচরণ রায়, পিয়ারী মোহন রায়, বিহারী মোহন রায়, শশী মোহন রায়, শরৎচন্দ্র রায়, মোহিনী মোহন রায়, ক্ষিতিষ চন্দ্র রায়, গিরিশ চন্দ্র রায়, শিরিশ চন্দ্র রায়, হরলাল রায়, যোগেশ চন্দ্র রায়, শ্রী নারায়ণ চন্দ্র রায়, শ্রী দুর্গাচরণ রায়, ক্ষেত্র মোহন রায়, কুঞ্জ মোহন রায় ও উপেন্দ্র চন্দ্র রায়। তাদের মধ্যে ক্ষেত্র মোহন রায় তিতাস উপজেলার প্রথম গ্র্যাজুয়েট এবং আইনজীবী। উপেন্দ্র চন্দ্র রায় তিতাস উপজেলার প্রথম গ্র্যাজুয়েট ডাক্তার। রামলোচন রায়ের মতো আরো দুজন নামকরা জমিদার হলেন- রাম সুন্দর রায় ও রামগতি রায়। শ্রী রামলোচনের পরে তার বংশধররা ২০০ বছর এই জমিদারি দেখা শোনা করতেন। জমিদারি প্রথার অবসান ঘটলে তার বংশধররা সম্পত্তি রেখে ভারতে পাড়ি জমান। সেই থেকে পড়ে আছে জমিদার বাড়িটি। এ বাড়িতে এখন আর জমিদারদের কেউ থাকেন না।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভুমি) আশিক উর রহমান জানান, জমিদার বাড়িটি সংস্কারের ব্যাপারে আমরা প্রত্নতত্ত্ব দপ্তরে চিঠি দিয়েছিলাম। এতে আমরা কোন সাড়া পাইনি। তাই এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নিতে পারিনি।
সর্বশেষ
প্রেমিকা জান্নাতকে ৬ টুকরো করে নদীতে ফেলে রাতে দুরুদ পড়ে ঘুমিয়ে যায় ঘাতক মুন্না
বিপিএল শুরু ৩০ ডিসেম্বর, খেলবে না কুমিল্লা
লাকসামে বিএনপি নেতার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ
সাবেক এমপি বাহার ও তার পরিবারকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
চৌদ্দগ্রামে ৮ বাস যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় সাবেক আইজিপি ২ দিনের রিমান্ডে
কুমিল্লার আদালতে আনা হয়েছে সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক কে
কুমিল্লায় বেড়েছে খুন