Logo

প্রেমিকা জান্নাতকে ৬ টুকরো করে নদীতে ফেলে রাতে দুরুদ পড়ে ঘুমিয়ে যায় ঘাতক মুন্না

প্রেমিকা জান্নাতকে ৬ টুকরো করে নদীতে ফেলে রাতে দুরুদ পড়ে ঘুমিয়ে যায় ঘাতক মুন্না

নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুমিল্লার তিতাসে ফোন করে ডেকে নিয়ে গুম করার ২ মাস ৫ দিন পর তথ্য মিলেছে ২ সন্তানের জননী গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌসের (২৫)। কুমিল্লা ডিবি পুলিশের অভিযানে প্রেমিক তারেক মাহবুব মুন্নাকে আটকের পর জান্নাতকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় বলে আদালতের বরাত দিয়ে ডিবি পুলিশ জানায়।

গত ৯ নভেম্বর কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক আবিদা সুলতানা মলির নিকট হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দি ও মামলা সূত্রে জানা যায়, তিতাসের জগতপুর ইউনিয়নের সাগরফেনা গ্রামের জামাল সরকারের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে একই গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে তারেক মাহবুব মুন্নার পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। বিষয়টি জানাজানি হলে ২০১৮ সালের দিকে জান্নাতের প্রথম সংসার ভেঙ্গে যায় এবং গত ২০২৩ সালে গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে মুন্নার সাথে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ের দিন ঠিক হয়। কিন্তু মুন্না জান্নাতকে বিয়ে না করে গোপনে বিদেশ চলে যায় এবং চলতি বছরের আগস্টের দিকে মুন্না দেশে আসে এবং অন্যত্র বিয়ে করে ফেলে। বিষয়টি জান্নাতকে কষ্ট দিলে দুজনের মধ্যে অন্তর্কলহ সৃষ্টি হয় এবং জান্নাতকে হত্যার প্লান করে মুন্না। পরিকল্পনা অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাসের ৫ তারিখে জান্নাতকে বাসা থেকে ফোন করে ডেকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী হোমনা উপজেলার মাথাভাঙ্গা এলাকা দিয়ে কাঁঠালিয়া নদীতে নিয়ে প্রথমে দেহ থেকে মাথা আলাদা করে। এরপর হাত ও পা বিচ্ছিন্ন করে মোট ৬ টুকরো করে নদীতে ফেলে দেয়। এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর ভিকটিমের মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে মুন্না ও তার মামা নাইমসহ ৭ জনকে আসামি করে তিতাস থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন।

এদিকে থানায় মামলা হলেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি ছিলো ভিকটিম পরিবারের। আসামী মুন্নাকে আটক করার জন্য পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরে হয়রান ছিলো জান্নাতের পরিবার। কিন্তু আসামী গ্রেফতার না করে উল্টো জান্নাতের পরিবারকে হয়রানী করেছেন বলে মামলা তদন্ত কর্মকর্তা কউসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তারা।

অন্যদিকে জান্নাতকে অপহরণের পর থেকেই তার ব্যবহৃত মোবাইল ব্যবহার করে ফেসবুকে ও ম্যাসেঞ্জারে অপপ্রচার চালায়। জান্নাত বেঁচে আছে এবং তাকে চরিত্রহীনা প্রমান করতে ১০ টি ফেইক আইডিও খুলে মুন্না।

মামলার বাদি ও ভিকটিমের মা হালিমা বেগম বলেন, আমার মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই বলছিলাম মুন্না আমার মেয়েকে গুম করেছে। কিন্তু পুলিশ কখনোই তাকে বা তার পরিবারকে গ্রেফতার করেনি। উল্টো আমরা নাকি জান্নাতকে লুকিয়ে রেখে নাটক করছি, সেজন্য আমার ছোট মেয়ের মোবাইল নিয়ে রাখে পুলিশ। পুলিশের অবহেলার কারণে আমার মেয়ের লাশটাও পাইলাম না। আমি এই হত্যার বিচার চাই।

মুন্না আটক ও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও তিতাস থানার এসআই কাউসার আহমেদ জানান, রহস্য উদঘাটনে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। খুব দ্রুতই জান্নাতের নিখোঁজের বিষয়টি বের করা হবে।

তবে কুমিল্লা ডিবি পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত (এসআই) মোঃ জীবন জানান, ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। আরো গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে বা যারা-ই জড়িত থাকবে, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।